Friday, April 3, 2015

অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি - সোনিয়া বীথি, দ্বিতীয় বর্ষ (গৃহ ব্যবস্থাপনা ও গৃহায়ন), গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ

অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিসোনিয়া বীথি দ্বিতীয় বর্ষ গৃহ ব্যবস্থাপনা ও গৃহায়ন বিভাগ গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজতোমরা আমাকে একটা শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাদের একটা শিক্ষিত জাতি দেব 
_নেপোলিয়ান

শিক্ষা মানুষের এমন এক মৌলিক অধিকার যা তাকে বিকশিত করে। প্রসারিত করে তার মনোভাব ও দৃষ্টিভঙ্গিকে এবং নতুন পরিবেশে খাপ খাওয়াতে অনুপ্রাণিত করে। আর সে শিক্ষা যদি হয় গার্হস্থ্য অর্থনীতির মতো জীবনভিত্তিক, তবে তা জীবনকে আরো অর্থবহ করে তুলতে পারে। আধুনিক সভ্যতায় গার্হস্থ্য শ্রমের গুরুত্ব সমাজ ও রাষ্ট্রে স্বীকৃত একটি বিষয়। সমাজ-রাষ্ট্রের অগ্রযাত্রায় গার্হস্থ্য অর্থনীতির গুরুত্ব ক্রমে বাড়ছে আমাদের দেশে। এ শিক্ষার গুরুত্ব অনুধাবন করে এ ধরনের শিক্ষার প্রবর্তন ঘটে ১৯৬১ সালে। ফলে ঢাকার প্রাণকেন্দ্রে গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়। গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। প্রতি বছর এখানকার ৫টি বিভাগে ৬৫০ ছাত্রী ভর্তি হন। এসব মেধাবী ছাত্রী বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজেদের নিয়োজিত রেখে দেশ ও জাতির জন্য সুনাম বয়ে আনছেন। এ ছাড়া শুধু গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের জন্য বিসিএস পরীক্ষায় ১০টি আসন বরাদ্দ আছে। প্রশাসন, ব্যাংক, সরকারি চাকরি, বহুজাতিক কোম্পানি ইত্যাদি সেক্টরে এ কলেজ থেকে পাস করা শিক্ষার্থীরা সুনামের সঙ্গে কাজ করছেন। গৃহ ব্যবস্থাপনা ও গৃহায়ন বিভাগটিকে বলা হয় গার্হস্থ্য অর্থনীতির প্রাণ। কারণ জীবনের প্রতিটি কর্মেই ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন। গৃহ ব্যবস্থাপনা হচ্ছে পারিবারিক লক্ষ্য অর্জনের জন্য সম্পদের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা। জীবনের লক্ষ্য পূরণের মাধ্যমে জীবনকে অর্থপূর্ণ করে তোলার পাশাপাশি জীবনযাপনে পরিবেশ এবং আবাসস্থলকে আরামদায়ক করে তোলার শিক্ষা দেয় গৃহ ব্যবস্থাপনা ও গৃহায়ন বিভাগ। ভোক্তা হিসেবে অর্থনীতিতে আমাদের অবদান থাকা উচিত। উন্নত প্রযুক্তির ক্ষেত্রে দেশীয় সম্পদ ব্যবহার করে অর্থনৈতিকভাবে সাশ্রয়ী হতে গৃহ ব্যবস্থাপনা ও গৃহায়ন বিভাগ শিক্ষা দেয়। গৃহনকশা, অভ্যন্তরীণ গৃহসজ্জা_ এসব এ বিভাগের অন্তর্ভুক্ত বিষয়। এছাড়া খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞানের ছাত্রীরা দেশের অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। বস্ত্র পরিচ্ছদ ও বয়নশিল্পে ছাত্রীরা ফ্যাশন ডিজাইনার হয়ে বিভিন্ন গার্মেন্টে কর্মরত আছেন। গার্মেন্ট শিল্প বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। এ খাত থেকে বাংলাদেশ প্রতি বছর প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে। শিশু বিকাশ ও সামাজিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্রীরা তাদের বিভাগ থেকে পাস করে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে চাকরি করছে। এছাড়া শিশুবিষয়ক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, শিশুবিকাশ কেন্দ্র, শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন পরিচালিত শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র, সেভ দ্য চিলড্রেন, ইউনিসেফ, ওয়ার্ল্ড ভিশন প্রভৃতি প্রতিষ্ঠানে কাজ করার সুযোগ ঘটছে। ব্যবহারিক শিল্পকলা বিভাগের ছাত্রীরা শিক্ষকতা, গবেষণা, কুটিরশিল্প সংস্থা পরিচালনা, বিজ্ঞাপন ডিজাইন সংস্থা, ডিজাইন সেন্টার, হোটেল ইনটেরিওর ডেকোরেশন, ফ্যাশান ডিজাইনিং সেক্টরে কর্মরত আছেন। আমাদের কলেজের সুপরিচিত মুখ প্রফেসর সিদ্দিকা কবির, বিবি রাসেল, শাহীন আহমেদ প্রমুখ দেশের জন্য বয়ে এনেছেন সম্মান ও স্বীকৃতি। আমরা এ কলেজ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে দেশ ও রাষ্ট্রের জন্য সুনাম বয়ে আনতে চাই। প্রতিটি মানুষের ছোট ছোট স্বপ্ন রয়েছে। এ স্বপ্নই একদিন বিস্ফোরিত হয়ে গড়ে তুলবে বড় স্বপ্ন। তাই আমরাও তাকিয়ে আছি ভবিষ্যতের দিকে। আমরা তরুণরা পারি বাংলাদেশকে বিনির্মাণ করতে। আমরা চাই বাংলাদেশ ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত ও অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ দেশ হোক। আর এ স্বপ্ন পূরণের জন্য প্রয়োজন সম্মিলিত প্রচেষ্টা। আমরা ছেলেমেয়ে কোনো ভেদাভেদ না করে দেশ ও জাতির কল্যাণে সমান এগিয়ে যেতে চাই। আমরা স্বপ্ন দেখি_ অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশের। একদিন হয়তো সত্যি সত্যি আমাদের দেশ স্বর্গরাজ্যে পরিণত হবে_ এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।

http://www.dainikdestiny.com/print_news.php?pub_no=309&cat_id=1&menu_id=78&news_type_id=1&news_id=57774

0 comments:

Post a Comment